বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম.......
আনাস ইবন মালিক (রাঃ) বরনিতঃ
" রাসুললাহ (সঃ) যখন [মদিনায়] আসলেন ,তখন তাদের ২টি উৎসবের দিন ছিল। তিনি (সঃ) বলেন 'এ ২ টি দিন এর তাৎপর্য কি?' তারা বলল 'জাহিলিয়াতের যুগে আমরা এ ২ টি দিনে উৎসব করতাম।' রাসুলুল্লাহ (সঃ) বললেন ' আল্লাহ্ তোমাদের কে এদের পরিবর্তে উত্তম কিছু দিয়েছেনঃ ইয়াওমুদ্দুহা ও ইয়াওমুল ফিতর।"
এ হাদিস থেকে দেখা যাচ্ছে যে ইসলাম আগমনের পর ইসলাম বহির্ভূত সকল উৎসবকে বাতিল করে দেয়া হয়েছে এবং নতুন উৎসবের জন্য দুটো দিন কে নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সাথে অমুসলিমদের অনুসরন এর যাবতীয় উৎসব পালনের পথকে বন্ধ করা হয়েছে।
অমুসলিম ,কাফির , কিংবা মুশরিকদের উৎসব এর দিন গুলো হচ্ছে তাদের জন্য উচ্ছৃঙ্খল আচরনের দিন, এ দিনে তারা নৈতিকতার সকল বাঁধ ভেঙ্গে দিয়ে অশ্লীল কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। আর এই কর্মকাণ্ডের অবধারিত রুপ হচ্ছে মদ্যপান ও ব্যভিচার । এমনকি খ্রিস্টান সম্প্রদায় এর বহুলোক বড়দিনে ও ভাবগাম্ভীর্যকে জলাঞ্জলি দিয়ে মদ্যপ হয়ে উঠে, এবং পশ্চিমা বিশ্বে এই রাত্রিতে কিছু লোক নিহত হয় মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণে।
অপরদিকে মুসলিমদের উৎসব হচ্ছে এবাদাতের সাথে সম্পৃক্ত। এই বিষয়টি বুঝতে হলে ইসলামের সার্বিকটাকে বুঝতে হবে। ইসলাম কেবল কিছু আচার - অনুষ্ঠান এর সমষ্টি নয়, বরং টা মানুষের গোটা জীবনকে আল্লাহ'র সন্তুষ্টি অনুযায়ী বিন্যস্ত ও সজ্জিত করতে উদ্যোগী হয়। তাই একজন মুস্লিমের জন্য জীবনের গোটা উদ্দেশ্যেই হচ্ছে এবাদাত, যেমনটি কুরআনে আল্লাহ্ ঘোষণা করেছ্বন
"আমি জিন ও মানুষকে আমার এবাদাত করা ছাড়া অন্য কোন কারণে সৃষ্টি করিনি। "(৫২:৫৬)
সেজন্য মুসলিম জীবনের আনন্দ- উৎসব আল্লাহর বিরুদ্ধাচারন ও অশ্লীলতা নয়। বরং টা নিহিত হচ্ছে আল্লাহর দেয়া আদেশ পালন করতে পারার মাঝে। কেননা মুসলিমের ভোগবিলাসের স্থান ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী নয়,বরং চিরস্থায়ী জান্নাত। তাই মুসলিমের জীবনের প্রতিটি কাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে থাকবে তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ ,তাদের ঈমান , আখিরাত এর প্রতি তাদের বিশ্বাস ,আল্লাহর প্রতি তাদের ভয় ও ভালবাসা।
তাই ঈদ- উল- ফিতর ও ঈদ- উল- আযাহ... - এ দুটি উৎসবই নির্ধারণ করা হয়েছে ইসলামের দুটি স্তম্ভ সম্পন্ন করার প্রাক্কালে। ইসলামের চতুর্থ স্তম্ভ সাওম পালন করার পর পর ই মুসলিমরা পালন করে ঈদ- উল- ফিতর। কেননা এই দিন্ টি আল্লাহর আদেশ পালনের পর আল্লাহের কাছ থেকে পুরষ্কার ও ক্ষমার ঘোষণা পাওয়ার দিন বিধায় এটি সাওম পালনকারির জন্য বাস্তবিকই উৎসবের দিন। এ দিন এজন্য উৎসবের দিন নয় যে এইদিন এ আল্লাহর নিষেধ ভুলে গিয়ে অশ্লীল কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। বরং মুসলিমদের জীবনে এমন একটি মুহূর্ত নেই , যে মুহূর্তে টার ওপর আল্লাহর আদেশ নিশেধ শিথিলযোগ্য।
তেমনি ভাবে ঈদ- উল- আযাহ পালিত হয় ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হজ্ব পালনের প্রাক্কালে । কেননা ৯ই জিলহজ্জ হচ্ছে আনন্দের দিন- ঈদ- উল আযাহ। এমনিভাবে মুসলিমদের উৎসবের এ দুটি দিন প্রকৃতপক্ষে আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করার দিন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন এবং শারিয়াত মোতাবেক বৈধ আনন্দ উপভোগ করার দিন- এই উৎসব মুসলিমদের এমানের চেতনার সাথে একই সূত্রে গাঁথা।
বর্তমানের আমরা যারা ঈদ পালন করি ,তারা কি কখনো এভাবে চিন্তা করি? অনেকে বলে থাকেন ঈদ এর চেয়ে নাকি তাদের কাছে পহেলা বৈশাখ,31st night বেশি উপভোগ্য, তারা বেশি মজা করতে পারেন এই দিন গুলোতে... । তাদের কাছে আমার প্রশ্ন হল 'আপনি কি একজন মুসলিম হিসেবে এ কথা বলছেন? " এক জন মুসলিমের কাছে ঈদ এর চেয়ে বেশি অন্য কোন অনুষ্ঠান প্রিয় হতে পারে না। এবং মুসলিমদের জন্য এ দুটি উৎসব নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি কি মুসলিম ? নাকি বাঙ্গালী?
কোন অমুসলিমকে দেখেছেন আপানার সাথে এসে একটি রোজা রাখতে? দেখবেন নাহ,কারন তারা তাদের পরিচয়, তাদের বিশ্বাস এর দিক দিয়ে ঠিক অবস্থানেই আছে। তবে আমরা কেন নিজেদের পরিচয় ভুলে গিয়ে পদে পদে ঠকর খাবো? ইহকাল , পরকাল ২ ই হারাবো?
আল্লাহ্ তালা আমাদের সঠিকটা বুঝবার তাওফিক দান করুন। আসুন এবারের রমজানে আমরা কেনাকাটা ,রান্না-বান্নায় ব্যস্ত না থেকে এর সঠিক মূল্যায়ন করি... এমন তো হতে পারে এটাই আমাদের শেষ রামজান !!!
জাযাকাল্লাহ খায়ের... ফী আমানিল্লাহ।
by - TanjiNa Ferdowsi MuFarredun
0 $type={blogger}:
Post a Comment
Thank's for your comment.